By মাজেদুল হক তানভীর
ফেসবুকে যেসব কাজ করা যাবে না
Media School August 3, 2024
ফেসবুক ব্যবহারের নানাবিধ বিধি-নিষেধ জানা ও তা পালন করা জরুরি।
হঠাৎ ফেসবুকে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো যায় না। কখনো এমনও দেখা যায়- পোস্ট, কমেন্ট বা শেয়ার বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীকে এসব সমস্যায় পড়তে হয়। ফেসবুকের সাধারণ কিছু নিয়মনীতি মানলে এসব সমস্যা হয় না। ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুকের এই নির্দিষ্ট নীতিমালাকে বলা হয় ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’।
সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন ৬ ভাগে বিভক্ত :
এক. সহিংসতা ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ
দুই. নিরাপত্তা
তিন. আপত্তিকর কনটেন্ট
চার. সত্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা
পাঁচ. মেধাস্বত্ব (ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টির কপিরাইট) এবং
ছয়. অনুরোধ ও সমাধান
বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক :
১. সহিংসতা ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ
যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও উসকানিমূলক কিছু পোস্ট করা যাবে না। এমনকি হিংসা বিষয়কে আরও বেশি প্রচারের জন্য বা বিষয়টি নিয়ে মজা করার জন্য তৈরি কোনো গ্রাফিক্স পোস্টও ফেসবুকে দেওয়া যাবে না।
২. নিরাপত্তা
কোনো মানুষের জন্য কোনোভাবে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন পোস্ট বা অন্যের করা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।
৩. আপত্তিকর কনটেন্ট
* হিংসাত্মক বক্তব্য লিখিত বা ভিজ্যুয়াল আকারে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া যাবে না। কোনো জাতি অথবা ব্যক্তির ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ কিংবা শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে সরাসরি আক্রমণ করা যাবে না।
* ধর্ষণ, মরদেহ ও দুর্ঘটনাসহ এখানে উল্লেখ করা বিষয়গুলোর ছবি অথবা ভিডিও পোস্ট করা যাবে না : ধর্ষণের ছবি ও ভিডিও, মরদেহের ছবি ও ভিডিও, কারো নগ্ন দেহের ছবি, আংশিক পঁচে যাওয়া শরীর, কোনো ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের সরাসরি সম্প্রচার, দুর্ঘটনায় রক্তপাত, মারামারি, মাথা থেকে শরীর বিচ্ছিন্ন, আগুন সরাসরি সম্প্রচার, শ্মশানে মরদেহ পোড়ানো, যেকোনো ধরনের নির্যাতন (যেমন : শিশুকে যৌন নির্যাতন, নারীকে যৌন নির্যাতন, অপ্রাপ্ত বয়স্ককে নির্যাতন ইত্যাদি), প্রাণী শিকার, প্রাণী হত্যা বা প্রাণী জবাই, প্রাণীর ক্ষত বা কাটার দৃশ্যমান চিত্র, গর্ভপাত, পরিত্যক্ত নবজাত শিশু ইত্যাদি।
৪. সত্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা
ভুয়া আইডি, স্প্যাম, ভুয়া নিউজ সরানোসহ এমন প্রয়োজনে ফেসবুক চিরুনি অভিযান করে থাকে। সাধারণত যেসব আইডি বা কনটেন্ট ফেসবুক সরিয়ে ফেলে বা সাময়িকভাবে ব্লক কিংবা ফ্ল্যাগশিপ করে সেগুলো হল :
- কোনো কারণে আইডি ভুয়া বলে মনে হলে
- স্প্যামিং করলে (যেমন : একই কমেন্ট বা পোস্ট অব্যাহতভাবে বিভিন্ন গ্রুপে, পেজে বা কমেন্টে করলে)
- সাইবার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় - এমনকিছু পোস্ট করলে
- অবিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রচার বা পোস্ট করলে
- ভুয়া খবর পোস্ট বা শেয়ার করলে - ইত্যাদি
৫. মেধাস্বত্ব (ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টির কপিরাইট)
ফেসবুক ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রক্ষার জন্য ব্যবহারকারী ও প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্য কারও ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি, কপিরাইট ও ট্রেডমার্ক পোস্ট ফেসবুক গ্রহণ করে না। এর মধ্যে মূলত দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয় :
এক. কপিরাইট ও
দুই. ট্রেডমার্ক
৬. অনুরোধ ও সমাধান
যদি কোনো ব্যবহারকারী তার নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সরাতে অনুরোধ করে তাহলে ফেসবুক তা অনুমোদন করে থাকে। মৃত কোনো ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট সরানোর অনুরোধ পেলে ফেসবুক সেটিও যাচাই-বাছাই করে তা সরিয়ে দেয়। সাধারণত কোনো আইডি বা কনটেন্ট যদি ফেসবুকের গাইডলাইন অমান্য করে বা কারও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করে, তাহলে সেই কনটেন্ট বা আইডি রিমুভ করার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে যে-কেউ অনুরোধ করতে পারেন। অভিযোগের বিষয় পর্যালোচনা করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকে। এ ছাড়া অপ্রাপ্তবয়স্কদের অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নিজে থেকেও এমন অনেক পদক্ষেপ নেয়।
তাই, নিজের ও অন্য সবার সুরক্ষার জন্য ফেসবুক ব্যবহারের এসব বিধি-নিষেধ জানা ও তা পালন করা জরুরি।
*মাজেদুল হক তানভীর : সাংবাদিক।