By ফাতিমা সুলতানা এমি
নারীশক্তি বনাম ভোগবাদী সমাজ
Media School December 20, 2020
আমরা নারী। যেমন সর্বংসহা, তেমনই দুর্গতিনাশিনী। কিন্তু কেন 'সর্বংসহা' বিশেষণটি কেবল আমাদের জন্যে? নারীদেরই কি কেবল সবকিছু সহ্য করে যেতে হবে? নারীদের জন্য কি শুধুই বন্ধুর পথ? না! কারণ, নারীদের 'সর্বংসহা'য় অলঙ্কৃত করে পরাধীনতার বেড়ি পরিয়ে দিলে কখনোই কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়।
কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দিতে এসেও ভোগবাদী সমাজের কাছে নারী যেন কেবলই 'দেহসর্বস্ব, সর্বংসহা, পণ্যরূপী' এক প্রাণ!
বর্তমানে কর্পোরেট দুনিয়ায় নারীদের যাতায়াত সুগম হলেও সেখানেও যেন তারা 'শক্তি দেবি' রূপে নয় বরং পণ্যরূপে হাজির। নারীর নেতৃত্ব বা ক্ষমতায়ন বিষয়ক কোন বিজ্ঞাপন, নাটক, চলচ্চিত্র, উপন্যাস হোক বা না হোক, নারীকে হেয় করে শত শত বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্র ঠিকই হচ্ছে। তাতে নারীরা আবার ঠিকই 'পুরুষের অধীন' রূপে হাজির হয়ে 'গর্বিত' হওয়ার মিথ্যে অভিনয় করেন!
এ অভিনয় যেন কত-শত যুগের...
নারীদের হতে হবে কোমল, ভীরু, গৃহকর্মনিপুণা- এ সকল অমূলক ধারণা থেকে যারাই বেরিয়ে আসছেন বা আসতে চাইছেন, তাদের সইতে হচ্ছে নানা কটূক্তি, গঞ্জনা। বহু ক্ষেত্রেই শত-সহস্র যুগের এই পুরুষশাসনের শেকল ভাঙ্গতে নারীরা তাদের নিজের পরিবারের সমর্থন, সহায়তা পায় না। বরং পরিবার ও পুরুষের শাসনকে আদর্শ মনে করে 'মেনে নাও' বোঝা চাপিয়ে নারীদের আরো দুর্বল প্রমাণ করতে আগ্রহী তারা!
তবে কিছু নারী পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে ঠিকই আমাদের নেতৃত্বের পথ দেখাচ্ছেন। এটাই সত্য যে, অধিকাংশ পুরুষ নারী নেতৃত্বকে তাদের 'পৌরুষের ওপর আঘাত' বলে মনে করলেও নারীরা 'একনায়কতন্ত্রে' নয় বরং সমতায় বিশ্বাসী।
অধিকাংশ নারীই বিশ্বাস করেন, পুরুষ ও নারীর সমান নেতৃত্বে, সমান অধিকারে একটি পিছিয়ে পড়া দেশ একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে। আমরা আশাবাদী, নারীদের কর্মক্ষেত্রে কিংবা এই ভোগবাদী সমাজে পণ্যরূপী না করলে নারীরা পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমাজের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারবে।
'নারী ও পুরুষ পরস্পরের পরিপূরক ও সহযোগী' - এ ধারণাই পারে ভোগবাদী সমাজে নারী ও পুরুষের সমতা ফিরিয়ে আনতে ও নারীকে সমাজের 'অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে।