Media School

Dhaka    Thursday, 21 November 2024

By সজীব সরকার

জেন্ডার সমতা কেন নয়?

Media School July 21, 2020

পুরুষতান্ত্রিক বিশ্বাস হলো, নারীরা দুর্বল ও পুরুষেরা সবল। পৃথিবীতে প্রচলিত ধর্মগুলোও দারুণভাবে পুরুষতান্ত্রিক; ফলে ধর্মগ্রন্থগুলোতেও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নারীকে পুরুষের তুলনায় দুর্বল, নিকৃষ্ট ও তাই ঐশ্বরিক নিয়মেই পুরুষের অধীন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। শিল্প-সাহিত্যেও এই ভ্রান্ত পুরুষতান্ত্রিক ধারণার উপস্থিতি বেশ প্রবল; তাই সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ যেমন : চিত্রকর্ম, উপন্যাস বা কবিতা কিংবা গানে গুটিকয় ব্যতিক্রম ছাড়া সর্বত্রই সেই ‘দুর্বল ও পুরুষনির্ভর’ নারীর প্রতিচ্ছবি।

নারীরা যে শারীরিক বা মানসিক কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে মোটেও দুর্বল বা অপারগ নয়, তার নজির অগুণতি রয়েছে। মেয়েরা খেলাধুলায় বিশ্ব মাতাচ্ছে, পড়াশোনায় ভালো করছে, কর্মক্ষেত্রে ভালো করছে - বিশ্বের অনেক অন্যতম সফল সিইও নারী; নারীরা মহাকাশে যাচ্ছে। তাহলে ‘মেয়েরা পারে না’ - এই কুতর্ক আর টিকছে না।

নারীর অধিকারকে স্বীকার করে নিয়ে যদি তাদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে তারা জ্ঞান-বিজ্ঞানের সব শাখায় পুরুষের পাশাপাশি সমানভাবে অবদান রাখবে। সমাজ-রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে (যেমন : রাজনীতি, অর্থনীতি, দর্শন) তারা অবদান রাখবে। এতে করে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের গতি স্বাভাবিকভাবেই আরো বাড়বে।

নারীকে সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে রেখে, বিরত রেখে পুরুষসমাজ আপাতদৃষ্টিতে ‘লাভবান’ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, তবে নারীকে যদি ব্যক্তি-সমাজ-রাষ্ট্রের কল্যাণে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হতে দেয়া হতো, তাহলে গোটা সমাজ সত্যিকার অর্থেই লাভবান হতো।

তাই এখনই সময় সবার সিদ্ধান্ত নেয়ার; নারী-পুরুষ পরস্পর দোষারোপ বন্ধ করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারী ও পুরুষের অধিকার ও ভূমিকা নিয়ে আন্তরিক সংলাপ চলমান রাখা দরকার এবং প্রত্যেকের নিজ নিজ জায়গা থেকে নৈতিকতা ও সততার পরিচয় দিয়ে একটি জেন্ডার সমতাপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলা দরকার। জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করা গেলেই রাষ্ট্র অনেকাংশে কল্যাণকর হয়ে উঠবে।

[লেখাটি ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ নিউজরুম ডটকম ডটবিডি-তে প্রকাশিত হয়।]