By সজীব সরকার
ক্লিক জার্নালিজম (Clickbait Journalism)
Media School September 28, 2020
ক্লিকবেইট জার্নালিজম প্রকৃত অর্থে অপসাংবাদিকতা।
কোনো একটি ওয়েবসাইটে ক্লিক (click) অর্থাৎ ভিজিটর বাড়াতে অনলাইন গণমাধ্যম, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা এ ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো অনেক ধরনের কৌশল ব্যবহার করে। এরা খুব সাধারণ (এমনকি মিথ্যা বা ভুয়া) কোনো কনটেন্টকেও চটকদার শব্দ-বাক্য-ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের সামনে উপস্থাপন করে যা অনেকটা বিজ্ঞাপনের মতোই পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করে। দৃষ্টি বা মনোযোগ আকর্ষণ করা ওইসব কনটেন্টের ওপর কেউ ক্লিক করলে তা মূলত একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে তাকে নিয়ে যায়। এভাবে ওই ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ে যা নানাভাবেই সাইটটির জন্যে লাভজনক। এভাবে কোনো কনটেন্টে ক্লিক করানোর কৌশলকে বলা হয় ‘ক্লিকবেইট’ (clickbait)।
অনেক অনলাইন সংবাদমাধ্যম তাদের বিভিন্ন সংবাদকে এমন চটকদার বা চিত্তাকর্ষক উপায়ে পাঠকের সামনে উপস্থাপনের মাধ্যমে তাদের পত্রিকার ভিজিটর বা পাঠক বাড়াতে চেষ্টা করে। এই প্রবণতাকে বলা হয় ক্লিকবেইট জার্নালিজম বা সংক্ষেপে- ক্লিক জার্নালিজম।
ক্লিক জার্নালিজমকে বিশ্বজুড়েই সাধারণত নেতিবাচকভাবে দেখা হয়। এর কারণ হলো, একটি সংবাদের বিষয়ের যদি গুরুত্ব থাকে বা এতে দরকারি তথ্য-উপাত্ত থাকে এবং যদি তা সুলিখিত হয়, তাহলে এমনিই সংবাদটি প্রচার ও পাঠকপ্রিয়তা পাবে এবং ওই নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমের ভিজিটর বা পাঠক বেশি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, একেবারেই সাধারণ বা গুরুত্বহীন, মানহীন এবং প্রায়ই মিথ্যা বা গুজবনির্ভর অন্তঃসারশূন্য কোনো বিষয়কে বাকচাতুর্য ও দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপনার মাধ্যমে পাঠকের ‘ক্লিক’ বাড়ানোর একটি ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর অর্থ হলো, সাংবাদিকতার যে মূল উদ্দেশ্য ও আদর্শ অর্থাৎ প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধান ও জনগণকে সেই তথ্য জানানো - এর পরিবর্তে বরং প্রতারণার মাধ্যমে ওয়েবসাইটে ক্লিক বা ভিজিটর বাড়িয়ে অর্থ উপার্জনই এই ক্লিক জার্নালিজমের মূল উদ্দেশ্য। এতে সাংবাদিকতার বদলে আসলে হলুদ বা অপসাংবাদিকতাই হয়- প্রকৃত সাংবাদিকতা নয়।