By সজীব সরকার
কালচার শক (culture shock) কী?
Media School May 9, 2024
প্রতীকী ছবি।
কোনো ব্যক্তি যখন নিজের পরিচিত সাংস্কৃতিক বলয়ের বাইরে নতুন কোনো সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হয়, তখন নতুন ওই সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ তার মধ্যে অনিশ্চয়তা, অস্বস্তি বা ভীতির মতো অনুভূতির জন্ম দিতে পারে। নিজের সবসময়ের অভ্যস্ততা থেকে বেরিয়ে এসে ভিন্নতর কোনো সংস্কৃতির সঙ্গে এমন পরিচয় বা মিথষ্ক্রিয়া ব্যক্তির মধ্যে যে অস্বস্তি তৈরি করে, সহজ কথায় সেটিই হলো কালচার শক (culture shock)।
ধরা যাক, কোনো ব্যক্তি সবসময় গ্রামে থেকেছেন এবং শহরের জীবনযাপন অর্থাৎ পথ-ঘাট-দালান, জীবিকার বৈচিত্র্য, ব্যস্ততা কিংবা পোশাক ও খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে তার তেমন ধারণা নেই। তাহলে, তিনি প্রথমবারের মতো যদি কোনো শহরে যান, সেক্ষেত্রে শহুরে জীবনের অনেককিছুই তার কাছে নতুন তো বটেই, অনেক সময় অস্বস্তিকর বা ভীতিকরও মনে হতে পারে।
বাংলাদেশের গ্রামের স্কুল-কলেজে পড়া অনেক শিক্ষার্থী প্রথমবার ঢাকার মতো শহরে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। দেশের অনেক শিক্ষার্থী বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায়। চাকরি কিংবা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে অনেকে নিজের পরিচিত শহর ছেড়ে অন্য শহরে কিংবা দেশ ছেড়ে বিদেশে যায়। এসব ক্ষেত্রে নতুন পরিবেশে এসে প্রথমেই সবাই সহজে মানিয়ে নিতে পারে না; কিছু ক্ষেত্রে তারা নানা ধরনের দ্বিধা, শঙ্কা বা অস্বস্তিতে ভোগে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পরিস্থিতি অর্থাৎ কালচার শক-এর মাত্রা ক্রমেই স্বাভাবিক হতে থাকে।
কালচার শক-এর ৪টি ধাপ রয়েছে। এগুলো হলো :
১. হানিমুন (honeymoon): এ ধাপে ব্যক্তি নতুন পরিবেশে তার জন্য অপ্রীতিকর বা অস্বস্তিকর নানা রকমের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে শুরু করে মাত্র।
২. হতাশা (frustration): এ ধাপে এসে ব্যক্তি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিগুলোর চাপে পড়ে হতাশায় ভুগতে শুরু করে।
৩. অভিযোজন (adaptation): অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে ব্যক্তি এ ধাপে এসে পৌঁছে যেখানে সে নতুন সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের পরিবর্তিত রীতি-রেওয়াজের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে থাকে।
৪. স্বীকৃতি (acceptance): এ ধাপে এসে ব্যক্তি নতুন পরিবেশের বাস্তবতাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে শেখে এবং এর সঙ্গে নিজেকে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে শেখে।
কালচার শক প্রশমন
সাংস্কৃতিক অভিযোজনের (cultural adaptation) মাধ্যমে কালচার শক কমিয়ে আনা যায়। নতুন জায়গা, ব্যক্তি, স্থান বা সংস্কৃতি সম্বন্ধে জানার চেষ্টা করা এবং এর রীতি-নীতিকে স্বাভাবিকভাবে নিতে শেখা খুব জরুরি। ওই সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ বাড়ালেও কালচার শক-এর মাত্রা সহজেই কমিয়ে আনা সম্ভব।