Media School

Dhaka    Saturday, 23 November 2024

By সজীব সরকার

আধুনিক সাংবাদিকতার প্রাচীন রূপ

Media School June 19, 2020

প্রতীকী ছবি। সোর্স : প্রিন্টারেস্ট থেকে সংগৃহীত

মৌর্যযুগে রাজকর্মচারিদের মধ্যে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি শ্রেণি ছিলো, যাদের বলা হতো প্রতিবেদক। সারা রাজ্য ঘুরে রাজ্যের বিভিন্ন খোঁজ-খবর নিয়ে আসাই ছিলো তাদের কাজ। এই চর্চাটিকে ইতিহাসবিদদের অনেকেই আজকের যুগের সাংবাদিকতার সমতুল্য মনে করেছেন। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে দেখা যায়, রাজা বা জমিদারদের বেতনভুক্ত কিছু ব্যক্তি গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঢোল পিটিয়ে লোক জড়ো করতো; লোক জড়ো হলে তারা রাজা বা জমিদারের কোনো নির্দেশ বা নতুন কোনো ‘আইনের’ খবর প্রজাদের জানাতো। তা ছিলো আজকের দিনের গণমাধ্যমের যে ভূমিকা, তারই পূর্বরূপ।

এ হিসেবে বাংলা ভূখণ্ডে সাংবাদিকতা চর্চিত হয়েছে খ্রিস্টের জন্মেরও আগে। তবে সাংবাদিকতার ব্যাকরণ মানলে বলতে হবে, সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক সাংবাদিকতার সূত্রপাত হয়েছে ব্রিটিশ শাসনামলে; কেননা এ অঞ্চলে ওই সময়েই সংবাদপত্রের জন্ম হয়েছে।

তবে এ ধরনের চর্চা এ অঞ্চল ছাড়া পৃথিবীর অন্য অনেক অঞ্চলেও ছিলো। যেমন : রোমে দুই হাজার বছরের বেশি সময় আগে সরকারি আদেশ ও অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্যে এক ধরনের গেজেট প্রকাশের ব্যবস্থা ছিলো; ওই গেজেটকে বলা হতো ‘অ্যাক্টা ডিউরনা’ (Acta Diurna)। সহজ কথায় অ্যাক্টা ডিউরনা প্রত্যয়টির অর্থ হলো প্রতিদিনের তথ্য বা দৈনন্দিন খবরাখবর। শুরুর দিকে এই গেজেট পাথর ও ধাতব বস্তুর ওপর খোদাই করে প্রকাশ করা হতো। ইতিহাসে সেই গেজেট অ্যাক্টা ডিউরনা নামে খ্যাত হলেও তখন এটি অ্যাক্টা পপুলাই (Acta Populi) বা অ্যাক্টা পাবলিকা (Acta Publica) ইত্যাদি নামেও অভিহিত ছিলো। অনেকে মনে করেন, সম্রাট জুলিয়াস সিজারের (১০০ বিসি-৪৪ বিসি) নির্দেশে প্রকাশিত ওই গেজেটই বিশ্বের প্রথম সংবাদপত্র। এটি খ্রিস্টপূর্ব ৫৯ অব্দ থেকে ২২২ অব্দ পর্যন্ত প্রচলিত ছিলো বলে ঐতিহাসিকেরা মনে করেন।

এখন থেকে কয়েকশো বছর আগে যখন নৌপথে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য হতো, তখন জাহাজে করে এক দেশের পণ্য অন্য দেশের বাজারে বেচা-কেনা চলতো। সে সময় একটি নির্দিষ্ট দিনে বন্দরে জাহাজ ভীড়লে একদল ব্যক্তি সারা শহর ঘুরে চিৎকার করে সেই খবর মানুষদের জানাতো; তাদের বলা হতো 'Town Criers'। তাদের ভূমিকাও আসলে আজকের দিনের প্রাতিষ্ঠানিক সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের প্রতিবেদকদের মতোই ছিলো।